President's Note
সংস্কৃতির পৌরোহিত্যে শিক্ষার উপনয়ন হয়। শিক্ষা ও সংস্কৃতি সহোদর স্বরূপ। শিশুদের বিকশিত হওয়ার জন্য যে পরিবেশ ও পরিকাঠামো প্রয়োজন তার যথেষ্ট অভাব গ্রামীণ জীবনে রয়েছে। গাঁয়ের ছেলে - মেয়েরা মেধার দিক থেকে পিছিয়ে না থাকলেও সর্বাঙ্গীণ বিকাশের দিক থেকে তারা যে পিছিয়ে তা বারে বারে প্রমাণিত হয়েছে। আপাদমস্তক গ্রামীণ জীবনের বাসিন্দা হিসাবে এই অভাববোধের মধ্য দিয়ে আমরাও বড়ো হয়েছি। ছেলেবেলা থেকে শৈশব - কৈশোরের দিনগুলিতে যা আমরা পাইনি, যা থেকে আমরা বঞ্চিত তা যেন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষেত্রে না ঘটে। এমন ভাবনা মনের মধ্যে বহুকাল সঞ্চিত ছিল। যা আমরা পাইনি তার তালিকা সুদীর্ঘ বলা চলে। বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো বয়স ছিল না। অনেকেরই স্লেট-পেনসিল ছিল না। অঙ্কন, আবৃত্তি, নাট্যাভিনয়, লাইব্রেরী, কম্পিউটার এসব কল্পনারও অতীত ছিল। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যোগাসন, প্রতিভা অন্বেষণ, বিজ্ঞান সচেতনতা, শিল্প সাধনার পরিবর্তে প্রাত্যহিক জীবনে ছিল অন্ন - বস্ত্র আর বাসস্থানের হাহাকার। ফলে অতীতের দিনগুলিতে অনেক সম্ভবনা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়েছে। মহাপুরুষদের জীবনকথা ও বিভিন্ন বাণী আমাকে বারবার উদ্বুদ্ধ করেছে। সেই প্রেরণা থেকে শিশুদের জন্যে মুক্ত পরিবেশে একটি আদর্শ বিদ্যালয় গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছি। তারই বহিঃপ্রকাশ চলন্তিকা নার্সারী ও কে.জি. স্কুল। বাণিজ্যিক মানসিকতা নিয়ে এই বিদ্যালয় গড়ে ওঠেনি। সমাজ সংস্কার, শিক্ষা সংস্কার ও সংস্কৃতির বিকাশ সাধনে এই প্রতিষ্ঠানের আবির্ভাব।